হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই খুব ভাল আছেন,
বন্ধুরা ভ্রমণের নেশা কার না থাকে। আর তা যদি হয় বিদেশে তাহলে তো কোনো কথাই নেই। আমরা সবাই চাই বিদেশ ভ্রমন করতে। কিন্তু একটি সমস্যা হলো ভিসা। তবে বাংলাদেশের পাসপোর্টের সম্মানে বিশ্বের অনেক দেশ রয়েছে যেখানে ভ্রমণ করতে হলে আপনার কোন ভিসা লাগবে না। শুধু এরাইভাল ভিসাতে ভ্রমণ করতে পারবেন। বিশ্বের ৪১টি দেশে। তো আজকে আমি আপনাদের সেরা ১০ টি দেশ সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি। যেখানে বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারে। শুধু বৈধ পাসপোর্ট থাকলে ।
তো বন্ধুরা পুরো প্রসেসটি বোঝার জন্য পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
১। মালদ্বীপ
দক্ষিণ এশিয়ার একটি ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র ৷ যার জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার। এর প্রায় শতভাগই মুসলমান। বিদেশিসহ এখানে প্রায় ৫ লাখ লোক বসবাস করেন। যার মধ্যে বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু দেশ। যার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা মাত্র ২.৩ মিটার। মুদ্রার নাম হলো মালদিভিয়ান রুফিয়া। আপনার যদি বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকে তাহলে ৩০ দিনের জন্য আপনি অন এ্যারাইভাল’ভিসা দিয়ে মালদ্বীপ থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মালদ্বীপ প্রায় বারোশোটি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। যা মাত্র ১৮৫ টি দ্বীপে স্থানীয় লোকজন বসবাস করে এবং বাকি দ্বীপগুলোতে পর্যটন হিসেবে গড়ে উঠেছে। এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নতমানের টুনা মাছ পাওয়া যায় বলে। মালদ্বীপকে টুনা কন্যাও বলে থাকেন অনেকে।মালদ্বীপের মূল আকর্ষণ হলো এর সরল, শান্ত ও মনোরম পরিবেশ, আদিম সমুদ্র সৈকত। এখানকার সমুদ্রের রং অতি পরিষ্কার, পানির রং নীল, বালির রং সাদা। ছোট ছোট দ্বীপগুলো যেন নানান রঙের মাছের অ্যাকুরিয়াম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিবছর প্রায় ৬ লক্ষের অধিক পর্যটক বিভিন্ন জায়গা থেকে মালদ্বীপ ঘুরতে আসে। তাছাড়া মালদ্বীপে আসা পর্যটকদের অন এ্যারাইভাল’ ভিসা দেওয়া হয়।
মালদ্বীপর দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
মাফুসি আইল্যান্ড | আলিমাথা আইল্যান্ড | হুলহুমালে আইসল্যান্ড |
তুলুশধো আইল্যান্ড | ভেলিগান্ডু আইল্যান্ড | আলিমথা দ্বীপপুঞ্জ |
বানানা রিফ | ফেদু | ফুভাহমুলা |
মারাধো | হিতাধো | কুড়েডু |
কীভাবে যাবেন?
নিম্নোক্ত রুট গুলো থেকে ঢাকা ও মালদ্বীপ বিমানযাত্রা করতে পারবেন। তাতে আপনার খরচ আসবে ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
★ ঢাকা–কলকাতা,ইন্ডিয়া –কোচিন,ইন্ডিয়া–মেল,মালদ্বীপ।
★ ঢাকা–ব্যাংকক–মেল,মালদ্বীপ।
★ ঢাকা–চেন্নাই–মেল,মালদ্বীপ। ঢাকা–কলোম্বো–মেল,মালদ্বীপ।
★ ঢাকা–সিঙ্গাপুর–মেল,মালদ্বীপ। ঢাকা–কুয়ালালামপুর–কলোম্বো–মেল,মালদ্বীপ।
★ ঢাকা–সিঙ্গাপুর–কলোম্বো–মেল,মালদ্বীপ। ঢাকা–দুবাই–মেল,মালদ্বীপ।
২। ইন্দোনেশিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। ল্যাটিন ইন্ডাস থেকে ইন্দোনেশিয়া শব্দটি এসেছে। ল্যাটিন শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় দ্বীপ। ১৯০০ সাল থেকে জায়গাটি ইন্দোনেশিয়া নামে পরিচিতি পায়। প্রায় ৫,০০০ দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এই দেশটি পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম জাকার্তা। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ এখানে ২৫ কোটির বেশি মানুষ বাস করে।
হাজার দ্বীপের সমারোহের কারণে সারা বছরই ইন্দোনেশিয়ায় হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দেশ থেকে এসে ভিড় জমায়। দ্বীপ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার ৫৭ শতাংশ ভূমি জুড়েই রয়েছে ক্রান্তীয় বনাঞ্চল। এছাড়াও এখানে রয়েছে অনেক পর্বত ও আগ্নেয়গিরি। সবচেয়ে বড় কথা ইন্দোনেশিয়া মূলত পর্যটকদের কাছে স্বর্গতুল্য। তাছাড়া এখানে ঘুরে আসতে বাংলাদেশীদের ভিসা লাগবে না। তাই চাইলে যে কোন ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন ইন্দোনেশিয়া থেকে।
ইন্দোনেশিয়ার দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
জাতিলুউই রাইস ফিল্ড | স্যাকরেড মানকি ফরেস্ট | কমোডো ন্যাশনাল পার্ক |
স্বর্গীয় বালি দ্বীপ | মাউন্ট ক্রাকাটাও | বান্ডা আইল্যান্ড |
টানা তোরাজা | মাউন্ট ব্রোমো | কালিমানটন |
কীভাবে যাবেন?
বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়ার সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই। ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে মালয়েশিয়া যেতে হবে। ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর এর টিকিট করে নিবেন এবং তারপর কুয়ালালামপুরে ৩-৪ ঘন্টা ট্রানজিট করার পর কুয়ালালামপুর– জাকার্তা বিমান টিকিট করে নিবেন। পুরো ভ্রমণটা ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা স্থায়ী হবে। আর অবশ্যই আগে থেকে টিকিট কেটে রাখার চেষ্টা করবেন। রাউন্ড ট্রিপ এর জন্য ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে।
অগ্রিম টিকিটি বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন — +8801719 – 705043
৩। ফিজি
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত একটি স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র। এর সরকারি নাম প্রজাতন্ত্রী ফিজি দ্বীপপুঞ্জ। ১৯৭০ সালের ১০ অক্টোবর, ফিজি স্বাধীনতা লাভ করে। এই দেশটি অস্ট্রেলিয়া থেকে ৩১৩০ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত। ফিজির জনসংখ্যা প্রায় ৯ লাখ ৯ হাজার ৩৮৯ জন। ফিজির রাজধানী হল সুভা এবং এখানকার প্রচলিত মুদ্রার নাম হল ফিজিয়ান ডলার। ফিজিতে তিনটি ভাষার প্রচলন রয়েছে ইংরেজি, ফিজিয়ান এবং ফিজি হিন্দি। বাংলাদেশীরা ছয় মাসের জন্য ফিজিতে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারে।
এখানেও প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমায় দেশটির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। ৩৩০টিরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দেশটি । এর মধ্যে ১১০টিতেই জনবসতি নেই। সব দ্বীপ মিলিয়ে মোট আয়তন ১৮ হাজার ২৭৪ বর্গকিলোমিটার। যার জন্য ফিজিকে মূলত দ্বীপ রাষ্ট্র বলা হয়। সমুদ্রের সৌন্দর্য আর দ্বীপের প্রবাল ও শ্যাওলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ফিজি থেকে। শুধু আপনার বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে।
ফিজির দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
বওমা ন্যাশনাল হেরিটেজ পার্ক | গ্রেট এস্ট্রোলেব রিফ | শ্রী শিভা সুব্রামনিয়া মন্দির |
ব্লু লেগন ক্রাইস | ফিজি মিউজিয়াম | প্যাছিফিক হার্বোর |
কুল ইকো পার্ক | লেভাকা, ওভালাউ | নাভুয়া রিভার |
ক্লাউডব্রেক |
কীভাবে যাবেন?
বাংলাদেশ থেকে ফিজিতে সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই। কিন্তু নিচে দেয়া রুটগুলোতে আপনি আকাশপথে ফিজিতে যেতে পারেন। যেখানে আপনার ১ লক্ষ ২o হাজার টাকা থেকে, দেড় লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
★ ঢাকা <–> সিঙ্গাপুর <–> নাদী
★ ঢাকা-ব্যাংকক-সিডনী-নাদী
★ ঢাকা-চায়না সাউদার্ণ-সিডনী-নাদী
★ ঢাকা-ব্যাংকক-অকল্যান্ড-নাদী
অগ্রিম ফ্লাইট বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন — +8801719 – 705043
৪। কম্বোডিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ কম্বোডিয়া। দেশটি কাম্পুচিয়া নামেও পরিচিত। অর্থাৎ খমের দেশ নামটিও সুপ্রচলিত। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটির মতো। দেশটি একদম সাদামাটা, তাই এটির সৌন্দর্যে কোনো জটিলতা নেই। কম্বোডিয়ার মুদ্রা হলো রিয়াল এবং এখানকার প্রচলিত ভাষা খমের ও ফরাসি। প্রায় ৬০ শতাংশ লোক কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। প্রধান খাদ্য ভাত আর মাছ।
কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেন শহরটি ছোট হলেও বেশ সাজানো গোছানো ও পরিষ্কার। এখানকার প্রধান আকর্ষণ আঙ্গকর ওয়াটের আতঙ্ককর প্রাচীন মন্দিরগুলি। আঙ্গকর ওয়াট বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় স্মৃতিস্তম্ভ, এবং এটি বিশ্বের প্রাচীন সপ্ত আশ্চর্যের একটি। মন্দিরের উপর সূর্যোদয় দেখার সময় আপনার নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হবে। ভ্রমণকারীদের আরেকটি জনপ্রিয় স্থান হলো দক্ষিণ কম্বোডিয়ায় অবস্থিত কাম্পট শহর। ছোট ঘুমন্ত শহরটি নিমেষেই আপনার মনে জায়গা করে নেবে। কয়েক দিনের ভালো একটা সময় কাটানোর জন্য ঘুরে আসতে পারেন কম্বোডিয়া থেকে।
কম্বোডিয়ার দর্শনীয় স্থানঃ
আঙ্গকর ওয়াটো | সিলভার প্যাগোডা | প্রিয়াহ ভাইহার |
বায়োন মন্দির | টনলি স্যাপ | শিনানক ভিলা |
কোহ কের | বন্টে স্যারি | ক্রাটি |
কীভাবে যাবেন?
বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়া কোনো সরাসরি ফ্লাইট নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে মালয়েশিয়া ট্রানজিট করতে হবে। যদিও এক্ষেত্রে কোন ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হবে না। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার পর কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট থেকে আপনি সরাসরি কম্বোডিয়া যেতে পারবেন, যাতে সময় লাগবে মাত্র দেড় ঘন্টা মত।
অগ্রিম ফ্লাইট বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন — +8801719 – 705043
৫। বাহামাস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বে, কিউবা ও হিস্পানিওলা দ্বীপের উত্তরে অবস্থিত বাহামাস দ্বীপপুঞ্জ। প্রায় ৭০০টি দ্বীপ ও হাজার খানেক “কী” এর ক্ষুদ্র বালুময় দ্বীপ নিয়ে গঠিত। দেশটির রাজধানী নাসাউ। প্রশাসনিক ভাষা হল ইংরেজি। দেশটিতে বাহামিয়ান ডলার ও আমেরিকান ডলার এই ২ ধরনের মুদ্রা চালু আছে। আপনার বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকলে বিনা ভিসায় ৩০ দিনের জন্য বাহামাস থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
বাহামা দ্বীপপুঞ্জে রয়েছে অসংখ্য দ্বীপ আর রয়েছে অসংখ্য বিচ। এইসব বিচ গুলোর নীল সৌন্দর্য আপনার চোখে পড়লেই নীল জলে গা ভাসিয়ে দিতে ইচ্ছে করবে। তাছাড়া এখানকার আবহাওয়া খুবই মৃদু প্রকৃতির। এখানকার ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ুর অনুকূলতার জন্যই প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ও আরও দূরের দেশ থেকে হাজার হাজার লোক এখানে বেড়াতে আসেন। এছাড়াও এখানকার খাবার-দাবার, জাদুঘর, ডাউনটাউন, কলোনিয়াল বাড়ি, ডলফিন ও পশুপাখি সবকিছুই আপনার মন কাড়বে।
বাহামাসের দর্শনীয় স্থান
আটলান্টিস প্যারাডাইজ আইল্যান্ড | আর্ডাস্টা গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা | ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারী |
প্রাচীন লাইট হাউজ | নাসাউ স্ট্র মার্কেট | প্যারাডাইস আইল্যান্ড |
পমপে মিউজিয়াম | লেগুন আইল্যান্ড | নাসাউ মিউজিয়্যাম |
কীভাবে যাবেন?
বাংলাদেশ থেকে বাহামাসে সরাসরি কোন ফ্লাইট। নেই কিন্তু নিচের রুটগুলো থেকে আপনি আকাশপথে বাহামাসে যেতে পারবেন। যেখানে আপনার খরচ হবে ১৯০০ থেকে ৫০০০ ইউএস ডলার।
★ ঢাকা- গাংজোউ,চায়না- টরোন্টো,কানাডা- নাসাও,বাহামাস।
★ ঢাকা- দোহা,কাতার- মিয়ামি,আমেরিকা- নাসাও,বাহামাস।
★ ঢাকা- দোহা,কাতার- লন্ডন,ইংল্যান্ড- মিয়ামি,আমেরিকা- নাসাও,বাহামাস।
★ ঢাকা- কুনমিং,চায়না- সাংহাই,চায়না- অ্যাটলান্টা, আমেরিকা-নাসাও,বাহামাস।
৬। ভুটান
দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাজতন্ত্র। ভূটানের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে মাতৃভাষা জংখা ভাষায় বা বজ্র ড্রাগনের দেশ নামে ডাকে। দেশটি ভারতীয় উপমহাদেশে হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত। ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম জনসংখ্যার একটি দেশ। থিম্পু এর রাজধানী শহর। এখানকার প্রশাসনিক ভাষা সংখ্যা এবং প্রচলিত মুদ্রার নাম গুলট্রাম। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা বিনা ভিসাতে ভুটানে যতদিন ইচ্ছা থাকতে পারে।
হিমালয়ের পূর্ব প্রান্তের বৌদ্ধ রাজত্ব ভুটান, এটির মঠ, দুর্গ এবং নাটকীয় ল্যান্ডস্কেপের জন্য সুপরিচিত। এখানে সমভূমি থেকে শুরু করে খাড়া পাহাড় এবং উপত্যকা সবকিছুই আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অথবা সেই এলাকার সংস্কৃতি, মানুষের জীবন-জীবিকার ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য। এসব দিক বিবেচনা করলে ভুটান সবসময়ই পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই থাকে। কারণ ভুটানের প্রত্যেকটি জিনিসই আপনাকে আকর্ষণ করবে। এখানকার পাহাড়-পর্বত, নদী, সবুজ বন সবকিছুতেই কেমন জানি একটা সৌন্দর্যের স্পর্শ লেগে আছে। প্রতিবছর সারা পৃথিবী থেকে হাজার হাজার মানুষ ভুটান ভ্রমণ করতে আসে। তাই যদি সময় পান ব্যাগ গুছিয়ে নিন, আর ঘুরে আসুন এই অপরূপ সুন্দর প্রতিবেশী দেশটি থেকে।
ভুটানের দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
সাসপেনশন সেতু | ন্যাশনাল মিওজিয়াম | ফজজিখা ভ্যালি |
কিচু মনাস্টেরি | টাইগার নেস্ট | চেলে-লা-পাস |
পুনাখা | থিম্পু | পারো ডিজং |
কীভাবে যাবেন?
বাংলাদেশ থেকে ভুটানে আপনি সড়কপথে এবং আকাশপথে দু’ভাবেই যেতে পারবেন। সড়ক পথে যেতে হলে আপনাকে প্রথম ইন্ডিয়ায় যেতে হবে। এর জন্য আপনার ইন্ডিয়ার ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হবে। ইন্ডিয়া যাওয়ার পর তারপর আপনি ইন্ডিয়া –ভুটান বর্ডার ক্রস করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে ৭ থেকে ১o হাজার টাকা। আর বিমানে যেতে চাইলে আপনি সরাসরি ঢাকা থেকে ভুটানের পারো বিমানবন্দর যেতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনার কোন ট্রানজিট ভিসা দরকার হবে না অর্থাৎ একদম ঝামেলা মুক্ত ভ্রমণ। আপনি ইকোনমিক ক্লাসে গেলে ১২ হাজার এবং বিজনেস ক্লাসে গেলে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ আসবে।
ইকোনমিক বা বিজনেস ক্লাস টিকিটের জন্য যোগাযোগ করুণ — +8801719 – 705043
৭। জ্যামাইকা
ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। এটি মধ্য আমেরিকার মূল ভূখণ্ড থেকে ৬২০ কিমি উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ্য। প্রধান ধর্ম হছে খ্রিস্টধর্ম। জ্যামাইকার রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর কিংস্টন। এবং এখানকার প্রশাসনিক ভাষা ইংরেজি। এখানকার প্রচলিত মুদ্রা জ্যামাইকান ডলার। শুধুমাত্র বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে আপনি এক মাসের জন্য অন এ্যারাইভাল’ভিসা দিয়ে এখান থেকে ভ্রমণ করে আসতে পারেন।
সবুজে আচ্ছাদিত পর্বতমালা, নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকত এবং নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার দেশটিকে পর্যটকদের একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলে পরিণত করেছে। ক্যারিবিয়ান সাগরের একটি দ্বীপ হিসেবে জ্যামাইকা আপনাকে উপহার দেবে সাদা বালিযুক্ত বিস্তৃত সমুদ্র সৈকতের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য। কৃষ্টাল নীল রঙের পানি, প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সূর্যাস্তের আভা এ সবকিছুর একটা কম্বিনেশন প্রত্যেকটা দ্বীপকে আরো সুন্দর করে তুলেছে। এছাড়াও উপকূলীয় আবহাওয়া আপনাকে জামাইকা ভ্রমণের জন্য উৎসাহ দেবে।
জ্যামাইকার দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
ডাক্তার ক্যাভ বিচ | রিও গ্র্যান্ডে নদী | পোর্ট আন্তোনিও |
মার্থা ব্রয়ে নদী | নেগ্রিল বিচ | মেফিল্ড ফল |
ব্লাক রিভার | ব্লু হোল | কিংস্টন |
কীভাবে যাবেন?
শুধুমাত্র ঢাকা থেকে তুর্কীস এয়ারলাইনস ঢাকা <—> জ্যামাইকা সার্ভিস দিয়ে থাকে, যদিও সেটা সরাসরি না মাঝখানে দুটি স্টপ আছে।
★ মুলত রুটটি হলোঃ ঢাকা <–> ইস্তাম্বুল, তুর্কী–নিউ ইয়র্ক সিটি – কিংস্টন,জ্যামাইকা। এই ট্রিপের জন্য আপনার খরচ আসবে ১৮০০ থেকে ৫০০০ US ডলার।
৮। ভানুয়াতু
দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় অবস্থিত। ৮০টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র। এটি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ৫৬০০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং অস্ট্রেলিয়ার ২৪০০ কিঃ মিঃ উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। এ দেশের রাজধানী হলো হারবারসাইড পোর্ট ভিলা। ২ লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশটিতে প্রায় ১১০ টি ভাষাভাষি লোক বাস করে। দেশটির মুদ্রার নাম ভানুয়াতু ভাতু। শুধুমাত্র বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে আপনি ভিসা ছাড়াই ৩০ দিনের জন্য ভানুয়াতু ঘুরে আসতে পারেন।
সরল সোজা সৌন্দর্যের দেশ ভানুয়াতু। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এখানে এখনো আদিবাসীরা বাস করে, অনেকেই এদেরকে মানুষ খেকো ভেবে ভুল করেন। ভানুয়াতুতে এখনো একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এখানকার মানুষের সরলতা ও সংস্কৃতি সম্বন্ধে বিস্তর ধারণা পেতে ঘুরে আসতে পারেন ভানুয়াতু থেকে। নীল জলে সাঁতার কাটা থেকে শুরু করে এডেন নদীর উপর দিয়ে হাটার মজা আপনি এখান থেকে উপভোগ করতে পারবেন। তাই যদি কখনো সময় হয় তাহলে ভানুয়াতু থেকে ঘুরে আসতে ভুলবেন না।
ভানুয়াতুর দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
মাউন্ট বেনবো ও মার্ট মারুম | মেল ক্যাসকেড জলপ্রপাত | ভানুয়াতু জাতীয় যাদুঘর |
মাউন্ট ইয়াসুর | মিলেনিয়াম গুহা | পোর্ট ওলরি |
ব্লু হোলস্ | Hideaway দ্বীপ |
কীভাবে যাবেন?
নিচের রুটগুলো থেকে ঢাকা টু ভানুয়াতু বিমানযাত্রা করতে পারবেন। তাতে আপনার খরচ আসবে আড়াই লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
★ ঢাকা–সিঙ্গাপুর–সিডনি–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
★ ঢাকা–গুয়াঙজো,চায়না–সিডনি–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
★ ঢাকা–কলকাতা–হংকং–ব্রিজবেন–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
৯। বার্বাডোস
ক্যারিবীয় সাগরে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। ১৯৬৬ সালে এটি যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ব্রিজটাউন দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।এখানকার প্রশাসনিক ভাষা ইংরেজি এবং প্রচলিত মুদ্রা হল বার্বাডিয়ান ডলার। সুন্দর এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়াই ৪ মাস ভ্রমণ করতে পারবে।
বার্বাডোসে যাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো হ্যারিসন এর গুহা, যা গরমের দিনগুলোতেও এটির নিচে ঠাণ্ডা থাকে, এবং এটি একটি চমৎকার বৃষ্টির দিনের বিকল্প হতে পারে। বার্বাডোসকে নীল দেশ বললে কোনে ভুল হবে না। যেদিকেই তাকান নীল সাগর নাহলে নীল আকাশ। সমুদ্র সৈকতের দিকে তাকালে মনে হবে সাদা বালুর কার্পেট কেউ যেন খুব যত্ন করে বিছিয়ে রেখেছে। তাছাড়া বার্বাডোসের মানুষরা খুব বন্ধুত্বসুলভ, এখানে গেলেই আপনি সেটা বুঝতে পারবেন। সমুদ্রে ডাইভিং, সাঁতার ও ফিশিং সবকিছুই করতে পারবেন এখানে। এসব মিস না করতে চাইলে সময় করে ঘুরে আসুন বার্বাডোস থেকে। সত্যিই অনেক ভালো লাগবে।
বার্বাডোসর দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
বার্বাডোজ বন্যপ্রাণী রিজার্ভ | সেন্ট নিকোলাস অ্যাবে | এনিমেল ফ্লাওয়ার কেভ |
ফার্লি হিল ন্যাশনাল পার্ক | সামুদ্রিক পার্ক & যাদুঘর | সেন্ট লরেন্স গ্যাপ |
ডাউনডাউন ব্রিডটাউন | কার্লিসেল বে এর সৈকত | বটম বে বিচ |
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে বার্বাডোস যেতে দেড় লক্ষ থেকে শুরু করে ৮ লক্ষ টাকার বিমান টিকেটে পাবেন। যার মাঝে দুই থেকে তিনটা স্টপে আপনাকে থামতে হবে। নিম্নোক্ত রুটগুলো থেকে বার্বাডোস যাওয়া যায়ঃ
★ ঢাকা–ইস্তাম্বুল–নিউ ইয়র্ক –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ ঢাকা–গুয়াঙজো,চায়না–নিউ ইয়র্ক –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ ঢাকা–হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট,কাতার–নিউ ইয়র্ক –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস। ঢাকা–হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট,কাতার–লন্ডন –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
১০। ডোমিনিকা
ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপরাষ্ট্র ডোমিনিকা। এটি একটি পর্বতময়, রুক্ষ দ্বীপ। এর বেশির ভাগ এলাকা ঘন ক্রান্তীয় অরণ্যে আবৃত। রোজো এর রাজধানী, এবং প্রধান শহর। এখানকার প্রশাসনিক ভাষা ইংরেজি হলেও এখানকার বেশির ভাগ মানুষ ফ্রেন্স থেকে উদ্ভূত ভাষা ক্রেওলে কথা বলে। ডোমিনিকার প্রচলিত মুদ্রা হলো ইস্ট ক্যারাবিয়ান ডলার। বাংলাদেশীদের ডোমিনিকা ভ্রমণের জন্য কোনো ভিসা প্রয়োজন হয় না। আপনার যদি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকে তাহলে এক মাসের জন্য অন এ্যারাইভাল’ ভিসা দিয়ে আপনি ডোমিনিকা ভ্রমণ করতে পারবেন।
ডোমিনিকা এর বিশাল পর্বতমালার, প্রচুর সবুজ বন এবং নদীগুলির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এটা সত্য যে, এখানে ততটা ভালো কোনো রিসোর্ট নেই, কিন্তু ব্যাপারটা হলো আপনি তো আর ডোমিনিকাতে ঘুমাতে যাবেন না। সাহসী পর্যটকদের জন্য ডোমিনিকা একটা ভালো চয়েজ, কারন তারা এখানে গিয়ে পর্বত আরোহন, ডাইভিং, সাতারসহ অনেক কিছু ডিসকভার করতে পারবেন। সর্বোপরি ডোমিনিকার ছোট ছোট দ্বীপ, প্রবাল প্রাচীর, ঘন অরণ্য, অন্যরকম প্রজাতির জীববৈচিত্র্য ও ছোট ছোট পাহাড়, টিলা সবকিছুই আপনাকে অভিভূত করবে। তাছাড়া ডোমিনিকাতে পর্যটকেরা খুব ফ্রি ভাবেই চলাফেরা করতে পারে, আসলে এখানে চোর, ছিনতাইকারীদের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
ডোমিনিকার দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
প্যাপিলট ট্রপিকাল গার্ডেন | Cabrits ন্যাশনাল পার্ক | ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত |
ট্রাফাল্গার জলপ্রপাত | রাজধানী রোজাও | শ্যাম্পেন রিফ |
বয়লিং লেক | রাজধানী রোজাও | মর্ন ট্রায়োস পিটনস্ জাতীয় উদ্যান |
কীভাবে যাবেন?
বাংলাদেশ থেকে একটা রুটেই ডোমিনিকা যাওয়া যায় সেটা হলোঃ
★ ঢাকা–দোহা, কাতার–লন্ডন–এন্টিগুয়া–ডোমিনিকা।
★ কাতার এয়ারলাইন্স এই রুটে সার্ভিস দিয়ে থাকে, যাতে খরচ আসে দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা।
তো বন্ধুরা আজকের মতো এই পর্যন্তই। আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের অনেক কাজে আসবে। পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে।
আর কথা না বাড়ায়।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন!
ধন্যবাদ!