বিমান ভ্রমণের ১০টি গুরুপ্তপূর্ণ টিপস
বিমান ভ্রমণের ১০টি গুরুপ্তপূর্ণ টিপস

বিমান ভ্রমণের কথা ভাবছেন?  বিমান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা যদি কম থাকে কিংবা একেবারেই না থাকে তবে আজকের এই ১০টি গুরুপ্তপূর্ণ টিপস্ আপনার জন্য। এই টিপস্ গুলো আপনার ভ্রমণ ও নিরাপত্তার ঝামেলাকে অনেকটাই সহজ করে দেবে।

বিস্তারিত জানতে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

১.অনলাইনে চেক-ইন করুন

অনলাইনে চেক-ইন করুন
অনলাইনে চেক-ইন করুন

বিমানবন্দরে ফ্লাইট চেক-ইন করতে বেশ সময় লাগে। এবং চেক-ইনে সবসময় লম্বা লাইন থাকে। আপনি যদি ফ্লাইট ধরতে বাসা থেকে ৩ ঘণ্টা আগে বের হতে না চান। তাহলে চেক-ইন অনলাইনে সেরে ফেলুন। অনলাইনে চেক-ইন করতে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না।

অনলাইনে চেক-ইন কিভাবে করবেন?

বেশির ভাগ বিমান সংস্থার ওয়েবসাইটের মেনুতেই আপনি ‘Web Check In’ অথবা ‘Check In’ নামের ট্যাব পাবেন। ট্যাব খুঁজে না পেলে বিমান সংস্থার ওয়েবসাইটে আপনার একাউন্টে লগইন করুন এবং আপনার বুকিং ডিটেইলসে প্রবেশ করুন। এখানে অবশ্যই আপনি অনলাইন চেকইন অপশন পাবেন।

ফ্লাইটের কতক্ষণ আগে অনলাইনেচেক-ইন করতে পারবেন?
সাধারণত আপনার ভ্রমণ শুরুর ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে ওয়েবসাইটে চেকইন অপশন চলে আসে। ভিন্ন ভিন্ন বিমান সংস্থার চেকইন সময় ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তাই নিশ্চিত ভাবে জানতে আপনার বিমান সংস্থার ওয়েবসাইটে থাকা চেক-ইন নির্দেশিকা পড়ে নিন।

চেক-ইন করতে কি কি লাগবে?
অনলাইনে চেকইন করতে আপনি কোন শহর থেকে কোন শহরে যাচ্ছেন,সেটা উল্লেখ করতে হবে। আপনার  “Email” আইডি ও বুকিং আইডি উল্লেখ করতে হবে। সাধারণত বুকিং কনফার্মেশন মেইলের মধ্যে বুকিং আইডি উল্লেখ করা থাকে। আপনি যদি বুকিং কনফার্মেশন মেইল না পেয়ে থাকেন বা হারিয়ে গিয়ে থাকে তবে এয়ারলাইন্সের গ্রাহকসেবা নাম্বারে ফোন করে জেনে নিন।

২. ব্যাগয়ের ওজন মেপে নিন

ব্যাগয়ের ওজন মেপে নিন
ব্যাগয়ের ওজন মেপে নিন

লাগেজের ওজনের ব্যাপারে প্রতিটি এয়ারলাইন্সের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন থাকে। বেশির ভাগ এয়ারলাইন্সে হাতের ক্যারি-অন ব্যাগের ওজন সহ ৩৩ কেজি পর্যন্ত বহনের অনুমতি দেয়া হয়। ব্যাগের ছাড়পত্র সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকতে হলে আগে আপনার এয়ারলাইন্সের নীতিমালা জানুন। তারপর নিজের ব্যাগের ওজন মেপে নিশ্চিত হন আপনি ওজন নীতিমালার মধ্যে আছেন কিনা। নীতিমালার বাইরে চলে গেলে হয় আপনাকে বাড়তি ওজনের জন্য বাড়তি টাকা দিয়ে ছাড়পত্র নিতে হবে অথবা কিছু জিনিস ফেলে রেখে যেতে হবে।

৩.পকেটের জিনিস ক্যারি-অনে রাখুন

সিকিউরিটি চেকের আগেই ব্যক্তিগত মোবাইল ছাড়া বাকি সবকিছু পকেট থেকে বের করে ফেলুন ও ক্যারি-অন ব্যাগে রাখুন। এতে আপনার সিকিউরিটি চেক খুব দ্রুত হয়ে যাবে ও লাইনে থাকা বাকিদেরও উপকার হবে।

৪.বিমানের খাবার থেকে দূরে থাকুন

বিমানের খাবার থেকে দূরে থাকুন
বিমানের খাবার থেকে দূরে থাকুন

বিমানের খাবারের দাম ব্যয়বহুল। তাই একটু প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে খাবার বাবদ কিছু টাকা বাঁচানো সম্ভব। চকলেট, চিপস, কুকিজের মত শুকনো খাবার সাথে রাখুন। বিমানের খাবার দামি হলেও সব বিমানের খাবার ভাল নাও হতে পারে। সস্তা এয়ারলাইনের বস্তাপচা খাবার বাড়তি দামে কিনে খাওয়ার থেকে চকলেট-চিপস খাওয়া অনেক ভাল।

৫. তরল জিনিস নেয়ার নীতিমালা

এরোসোল, জেল, ক্রিম ও পেস্ট জাতীয় জিনিসকে বিমানে তরল জিনিস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই আপনার ক্যারি-অন ব্যাগে এই জিনিস গুলি থাকলে তা সিকিউরিটি চেকে আটকে দিতে পারে। তাই যে বিমানে ভ্রমণ করছেন তার তরল জিনিস সংক্রান্ত নীতিমালা গুলি আগেই জেনে রাখুন। আর তরল জিনিস ব্যাগের উপরের দিকেই রাখুন যাতে ফেলে দেয়ার দরকার হলে ব্যাগ ঘাটার দরকার না হয়। সাথে পানির বোতল থাকলে সেটি আগেই খালি করে রাখুন।

৬. বিমানের নিষিদ্ধ জিনিস সম্পর্কে জানুন

বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু নিষিদ্ধ জিনিস রয়েছে যা আপনি সাথে রাখলে নিজেও যেমন বিব্রত হবেন তেমনি অন্যদেরও সময় নষ্ট করবেন। পাশাপাশি বিমান কর্তৃপক্ষও বিপদে পড়বে। নিষিদ্ধ জিনিসের তালিকায় চোখ বুলিয়ে নিন। ভ্রমণের সময় নিজের ব্যাগ নিজে প্যাক করুন। যাতে নিজের অজান্তে কোন নিষিদ্ধ জিনিস ঢুকে না যায়।

৭. সিট বাছাই করা

সিট বাছাই করা
সিট বাছাই করা

আগে আগে বিমান টিকিট বুকিং করলে আপনি অসংখ্য খালি সিট থেকে নিজের পছন্দ মত সিট বুক করে নিতে পারবেন। তাই চেষ্টা করুন অনলাইনে টিকিট বুক করার ও দেখে শুনে সিট বাছাই করুন। জানালার পাশের প্রথম সারির সিট বুক করার চেষ্টা করুন। প্রথম সারিতে বসার সুবিধা হল এখানে পা মেলার বিশাল জায়গা পাওয়া যায়। টয়লেটের পাশের সিট থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

অগ্রিম বিমান টিকিট বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন – 01719-705043

৮. ব্যাগে ট্যাগ লাগানো

বাসা থেকে নিজের ব্যাগের জন্য নিজেই ট্যাগ প্রিন্ট করে এঁটে দিন। এতে কিছুটা সময় সাশ্রয় হবে। আর ব্যাগ যতটা সম্ভব ছোট করুন। খুব প্রয়োজনীয় জিনিস না হলে ব্যাগে ঢুকিয়ে ভারি করবেন না। এতে আপনি খুব দ্রুত সিকিউরিটি চেক পার হতে পারবেন। মনে রাখবেন আপনার হ্যান্ড ব্যাগ যত ভারি হবে আপনার চেকিং তত বেশি সময় লাগবে।

৯. পোষা প্রাণী সাথে রাখার জটিলতা

ঘুরতে যাওয়ার সময় পোষা প্রাণী সাথে নিতে চাইলে আপনাকে অগ্রিম পরিকল্পনা করে রাখতে হবে। পোষা প্রাণীর ক্ষেত্রেও একেক এয়ারলাইন্সের একেক নীতিমালা রয়েছে। কোন কোন এয়ারলাইন্সে পোষা প্রাণী একেবারেই বহন করতে দেয়া হয় না। অনেক এয়ারলাইন্স বহন করতে দেয় তবে বিভিন্ন সর্ত আরোপ করে দেয়। যেমন প্রথম শ্রেণীতে পোষা প্রাণী নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না, মালবাহী কমপার্টমেন্টে পোষা প্রাণী রাখা যাবে না ইত্যাদি। তাই পোষা প্রাণী নিয়ে ভ্রমণের ইচ্ছা থাকলে এসব শর্ত সম্পর্কে অবগত হয়ে নিন।

১০. এয়ার পোর্ট লাউঞ্জে ফ্যামিলি রুম

এয়ার পোর্ট লাউঞ্জে ফ্যামিলি রুম
এয়ার পোর্ট লাউঞ্জে ফ্যামিলি রুম

আপনি যদি শিশুসহ পরিবার নিয়ে বিমান ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে এয়ারপোর্টের লাউঞ্জ এক্সেস নিতে পারেন। একা একা হয়তো লাউঞ্জে খরচ করাটা ব্যয়বহুল হতে পারে। তবে পরিবার নিয়ে লাউঞ্জে ঢুকলে খরচের টাকা উসুল করে ফেলা সম্ভব। নানা রকমের নাস্তা, বিনোদনের ব্যবস্থা, টিভি, ওয়াইফাই এমন অনেক সুবিধাই রয়েছে লাউঞ্জে।

এসব কৌশল অবলম্বন করে আপনি আপনার ভ্রমণকে করতে পারেন আরামদায়ক। সঠিক ভাবে কৌশল অবলম্বন করতে পারলে আপনি ইকোনমি ক্লাসের খরচে ফার্স্ট ক্লাস ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন।

আমাদের পুরো পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পোষ্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু বা ফেমিলির সাথে শেয়ার করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here