বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজ্জনক রাস্তা কারাকোরাম ডেথ রোড | যাকে মরন বা কবরের রাস্তা ও বলে হয়ে থাকে
বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজ্জনক রাস্তা কারাকোরাম ডেথ রোড | যাকে মরন বা কবরের রাস্তা ও বলে হয়ে থাকে

আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য সভ্যতা  সংস্কৃতি ও প্রন্ততান্ত্রিক নিদর্শন এর জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে গিয়ে ভিডিও ধারণের ধারাবাহিকতাই

AHolidayTour পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানিয়ে শুরু করছি, বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা কারাকোরাম ডেথ রোড, যাকে মরন বা কবরের রাস্তা ও বলে থাকে l

কিছু রাস্তা মানুষের জীবনকে নতুন রূপ দেয়, কিন্তু এই রাস্তাটি কেড়ে নিয়েছে মানুষের জীবন l আমরা এখন পাকিস্তানের বাল্মিকী স্থান গিরগিটি স্থানে অবস্থান করছি, এখানে আসার জন্য অনেক ধরনের প্রিপারেশন নিতে হয়, এখানে এসে অনেকেই জীবন হারিয়েছেন l এ রাস্তাটি অনেক সমস্যাযুক্ত  ও অবহেলিত, বিশ্বের নবম বৃহত্তম পর্বত, নাঙ্গা পর্বত l এখানকার গ্রামবাসীরাই এই রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন l এর পরবর্তীতে এটি আর কখনোই নির্মাণ করা হয়নি l এই ভ্রমণে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে যাত্রা শুরু করতে হয় l প্রথমে বাসে চড়ে মুজাফফর এর দিকে যেতে হয়, যাত্রার শুরুতেই ভিতরটা অনেকটাই হু হু করে কেঁপে উঠছিল l এমন সময় বাসটি থামিয়ে আমাদের প্রত্যেকের পরিচয় পত্র এবং মাস্ক খুলে প্রত্যেকেরই ফেস ভিডিও ধারণ করেছিলেন l

আমরা এই জিরো পয়েন্ট এর যাত্রা শুরুতেই প্রথমে আমরা গিরগিটি পৌঁছাব. যেখানে যেতে আমাদের সময় লাগবে  ১৪ থেকে ১৫ ঘন্টা মত l গিরগিট পৌঁছানোর পরে বিশ্বের সবচাইতে বিপদজনক রাস্তা ধরে ফেরারি মেরুতে পৌঁছাব, সেখানে যেতে মোট সময় লাগবে ২৪ ঘন্টার মত l যেটি কারাকোরাম পথ হয়ে যেতে হয়, ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ দশকে পাকিস্তান এবং চীনের সহয়তায় এটি বাণিজ্যিক রাস্তা হিসেবে নির্মিত হয়েছিল l পাকিস্তানের ইসলামাবাদ শহর এবং চীনের কাশকর শহর কে সংযুক্ত করেছে l এটি খুবই বিপদজনক রাস্তা, এই সড়কটি নির্মাণের সময় এক হাজারেরও অধিক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন l এখানে প্রতিনিয়ত বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়ে থাকে, যাতে করে রাস্তায় বিপদের আশঙ্কা আর ও বেশি সংগঠিত হয়ে থাকে l

বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজ্জনক রাস্তা কারাকোরাম ডেথ রোড | যাকে মরন বা কবরের রাস্তা ও বলে হয়ে থাকে

এখানে  ভ্রমণকালে অনেকেই ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে থাকেন, এ রাস্তা গুলিতে যেকোনো সময় উপরে থেকে পাহাড় ধসে পাথর পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়, এবং রাস্তা গুলো খুবই শরু যাতে করে একটি গাড়ি আরেকটি গাড়ির পরিবর্তন ঘটানো খুবই কঠিন l

তবে এ রাস্তায় যাত্রাকালে রাস্তাঘাট পাহাড়-পর্বত আপনার ভ্রমন পিপাসু মনকে মুগ্ধ করবে l এযাত্রাকালে আপনি অনেক দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দেখতে পাবেন, যা আপনার জীবনকে শিহরীত করে তুলবে l এরাস্তা গুলিতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে l

পাকিস্তান পাহাড়ে ভরা , বিশ্বের সর্বোচ্চ উঁচু ২৬ হাজার ফুট উঁচু পর্বতের মধ্যে চারটিই রয়েছে  এই পর্বতটির মধ্যে l এই ভ্রমনটি সম্পন্ন করতে ধৈর্য, প্রতিভা, এবং ইস্পাতের এর মত শক্তি  প্রয়োজন l ড্রেন না থাকায়, এবড়ো থেবড়ো রাস্তাতে পানি জমা হয়ে থাকে, যা রাস্তাকে আরো ভয়ংকিৎত করে l রাস্তায় যাত্রাকালে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে, আপনি ও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন l তাই  প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে নিতে অবশ্যই নিতে ভুলবে না l

১১ থেকে ১২ ঘন্টা যাত্রা শেষে আমাদের ভয়ঙ্কর যাত্রা শুরু হবে l এই রাস্তা কোন পিচঢালা পথ নয়, শিলা পাথর বা পাহাড়ের ভূমিধসে পাথরের শিলা মাত্র l এবং এ রাস্তায় কোন সুরক্ষা ব্যবস্থাও নেই, এরাস্তা গুলিখুবই এলোমেলো এবং এবড়োথেবড়ো l

কারাকোরাম হাইওয়ে থেকে সিউরি মেরচ, এই শরু চওড়া যুক্ত পথটি আমাদেরকে আত গ্রামে নিয়ে যাবে l শেষ গন্তব্য টি হচ্ছে ফিউরিমেরস l স্বর্গ থেকে মেঘের মধ্যদিয়ে ১০ হাজার ৮০০ ফুট উঁচুতে পৌঁছে যাওয়া, এই ভ্রমনটি করতে অনেকেই দুঃসাহসিকরাই প্রাণ হারিয়েছেন l এ যাত্রায় ভ্রমণকালে গাড়িতে বসে থাকতে ক্লান্ত ও ঘাড় ব্যথা হয়ে যায় l এযাত্রায় মনে হবে যেন রাস্তা দিয়ে নয়, ভূখণ্ড দিয়ে যাচ্ছি l তারা রাস্তাটি ঠিকমতো নির্মাণ করতে ও পারেনি l

বিশ্বের নবম বৃহত্তম পর্বত নাঙ্গা পর্বতের গ্রামবাসীরা এটি নির্মাণ করেছিল l এর পরবর্তীতে সরকারি বা কোন পর্যায় থেকে এটিকে নির্মাণ করা হয়নি l এ রাস্তায় গাড়ি চালককে অবশ্যই প্রতিনিয়ত রাস্তার দিকে খেয়াল রাখা উচিত, এছাড়া খুব সহজেই দুর্ঘটনা সংঘটিত হতে পারে l যা অনেক মানুষের প্রাণ হরণ করেছে l তিন ঘন্টার ১৬.২  রাস্তাটি, যা মানুষের জীবনকে হরণ করেছে, এবং অনেক মানুষের জীবনের স্মৃতিচারনের চিহ্ন টুকুও খুঁজে পাওয়া যায়নি l

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং খারাপ উচ্চতর রাস্তা সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই, এই রাস্তাটি যা, যে কোন মুহূর্তে আপনার জীবনে নাশকতা সংঘটিত হতে পারে l এই রাস্তা গুলো দেখুন, চারদিকে উঁচু নিচু পর্বতমালার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে l এটি এমন একটি রাস্তা যেখানে নেটওয়ার্কের কোন সিগনাল নেই, এবং এখানকার স্থানিওরা এটিকে মরন বা কবরের রাস্তা বলে থাকেন l

এ সমস্ত দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত আমরা পৌঁছায় (ফেইরি মেডোস) , এই সমস্ত ভংয়কর সব পথ পাড়ি দিয়ে পৌছাবেন গ্রাম তাতো l সেখান থেকে (ফেইরি মেডোস) পৌছতে প্রায়  সময় লাগবে তিন ঘন্টা মত l এখানে অনেক সময় বৃষ্টি হয়ে থাকে, এবং রাস্তাগুলি হচ্ছে পর্বতের নিচে, এবং রাস্তায় চলার পথে পাহাড়ের উপর থেকে ছোট বড় পাথর পড়ে l এখনে তাতোকরা  বহুদিন থেকে বসবাস করছে l

এই গ্রামের মানুষরা বহুদিন জীবিত থাকেন, এখানে পাহাড়ি আবহাওয়ার জন্য পুসপুস অনেক শক্তি শালী হয়ে থাকে, এবং ৯০ বছরের নিচে মারা গেলে তাকে অল্প বয়সী মৃত বলে ধরা হয়ে থাকে l কিন্তু আমরা সাধারনত ৮০ থেকে ৯০ বছর বয়সেই বৃদ্ধ পর্যায়ে চলে যায়, এখানকার ছাগল গুলো খুবই শক্তিশালী এবং মাঝে মাঝে ভল্লুক ও দেখা যায় l

সর্বশেষের রাস্তাটুকু ঘোড়ায় চড়ে  যাওয়া যায়, যার ভাড়া  দুই থেকে তিন হাজার রুপি নিয়ে থাকেন l এই রাস্তাগুলি খুবই ভয়ংকর পিচ্ছিল, একটু পা পিছলে গেলে মৃত্যু অনিবার্য l উঁচু-নিচু ভয়ঙ্কর যাত্রাপথ এটি, যা জীবন সবসময় আশঙ্কা থাকে l সামান্য একটু ভুল করলেই  জীবন মৃত্যুর মুখে ঝরে পড়বে l এই দুঃসাহসিক যাত্রায় অনেকের জীবন কেড়ে নিয়েছে l অবশেষে যাত্রাপথটি শেষ হয় ফেয়রি মেডজে, এখানে আবাসিক হোটেল রয়েছে l অবশেষে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মাধুর্য কুয়াশা আপনাকে মনমুগ্ধকর করে তুলবে l

এই জায়গাটি থেকে লাহোর শহর ইসলামাবাদের দিকে ৫ ঘণ্টার একটি যাত্রাপথ l ইসলামাবাদ থেকে গিরগিটি যেতে ১২ ঘন্টার যাত্রাপথ, অত্যন্ত বিপদজনক গাড়ী ভ্রমন l ঐ অঞ্চল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক তিন ঘন্টার জিপ যাত্রা রয়েছ l এবং ৩০ মিনিটের ক্লান্তিকর পায়ে হাটা অথবা ঘোড়ায় যাত্রা রয়েছে l আমাদের অক্লান্ত বর্ণনায় কোন প্রকার ভূল ভ্রান্তি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, এবং এই শিহরীত ভ্রমন সম্পর্কিত আপনার মূলবান মন্ত্রব্য লিখে A Holiday Tour কে উৎসাহিত করবেন l

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here